ভাল ফুটবলার হলে ভাল
কোচ হওয়া যায় না? ইংরেজি মিডিয়াশ্রিত এই ভাবনায় সওয়ার হবেন না প্লিজ, লিখলেন
কাশীনাথ ভট্টাচার্য
জিনেদিন জিদানের রেয়াল মাদ্রিদ, বায়ার্ন মিউনিখের কোচ পেপ গারদিওলা, আতলেতিকো
মাদ্রিদের দিয়েগো সিমিওনে, ম্যাঞ্চেস্টার সিটির দায়িত্বে
মানুয়েল পেয়েগ্রিনি। যথাক্রমে ফ্রান্স, স্পেন, আর্জেন্তিনা ও চিলির চার ফুটবলার, যাঁদের মধ্যে
পেয়েগ্রিনি ছাড়া প্রত্যেকেই জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন! এই চার দলই আছে এবার
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের খেতাবি দৌড়ে।
ফুটবলে প্রচলিত কথা, ফুটবলার হিসাবে
যত বড়ই হোন না কেন, কোচ হিসাবে তত বড় হওয়া নাকি সম্ভব নয়!
আমাদের ভারতে এর ব্যতিক্রম দেখিয়েছেন প্রদীপ কুমার
বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে পিকে ব্যানার্জি। পরে তাঁর দুই ছাত্র সুভাষ ভৌমিক এবং সুব্রত
ভট্টাচার্য। আন্তর্জাতিক আসরে তো ছড়াছড়ি। মারিও জাগাও (Zagallo) ছিলেন। ১৯৫৮ এবং ১৯৬২ বিশ্বকাপ
জিতেছিলেন ফুটবলার হিসাবে। ১৯৭০ সালে কোচ হয়ে। পরে আবার ১৯৯৪ সালেও ব্রাজিলের
বিশ্বকাপজয়ী দলে ছিলেন টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসাবে। ফুটবলার হিসাবে দুবার বিশ্বকাপ
জয়ের পর কোচ এবং টিডি হিসাবে আরও দুবার বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব আর কারও নেই!
ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারও ফুটবলার হিসাবে ১৯৭৪ সালে বিশ্বজয়ের পর ম্যানেজার হিসাবে
বিশ্বজয় করেছিলেন ১৯৯০ সালে। যাঁরা ফুটবলার হিসাবে তত বড় নন, বিশ্বকাপে খেলারই সুযোগ পাবেন না, নিশ্চিত। তাই
তাঁদের পক্ষে এমন রেকর্ড নিয়ে ভাবাই অর্থহীন!
![]() |
মারিও জাগাও |
গোড়ায় গলদ এমন ভাবনার যা বলে, ভাল ছাত্র হলে ভাল শিক্ষক হওয়া যায় না! প্রধানত ইংরেজ মিডিয়ার সৌজন্যে এমন
এক ভাবনা প্রচলিত, মধ্যচিত্ততাকে মহান হিসাবে তুলে ধরতে
চাওয়ার কারণে। প্রতিভাবানরা পরিশ্রমবিমুখ, এমন প্রচার তাঁরা
এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন। পেশাগত দিক দিয়ে কোচিং পরিশ্রমসাপেক্ষ বলা হয়। যেন ফুটবল
খেলাটা পরিশ্রমসাপেক্ষে নয়! তাদের এই ভাবনার সমর্থনে কিছু উদাহরণও পাওয়া গিয়েছে।
পেলে সেভাবে কখনও আসেননি প্রশিক্ষণে। যেমন আমাদের ভারতে আসেননি চুনী গোস্বামীও।
কিংবা, কোচ হিসাবে কাজ করতে এসে যারপরনাই ব্যর্থ দিয়েগো
মারাদোনা। কিন্তু, তার মানে কি এই যে, সর্বোচ্চ
স্তরের ফুটবলাররা কোচিংয়ে এলেই ব্যর্থ হবেন? জোহান ক্রুয়েফের
চেয়ে বড় কোচ আর কে, যিনি ফুটবলার হিসাবে কোচ রাইনাস মিশেলের
হাতে পড়ে ফুটবলকে বদলে দিয়েছিলেন, আবার কোচ হিসাবে নিজে এতজন
ফুটবলারকে প্রভাবিত করেছেন যে, পাল্টে গিয়েছে আধুনিক ফুটবলের
সংজ্ঞাই? ফুটবল ইতিহাসে তিনি তো অনন্য, একা!
আর এই ভাবনাকে গতি দিয়েছিল সাম্প্রতিক অতীতে দুই
ব্যর্থ ফুটবলারের কোচ হিসাবে ইংরেজ ফুটবলে আশাতীত সাফল্য। ২০০৪-০৫ মরসুমে দুজনেই
এসেছিলেন ইংল্যান্ডে। হোসে মোরিনিওকে এনেছিল চেলসি, রাফায়েল
বেনিতেজকে লিভারপুল। ২০০৩-০৪, এফসি পোর্তো জিতেছিল
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, মোরিনিওর প্রশিক্ষণে। আবার বেনিতেজের
লিভারপুল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে ২০০৪-০৫। পরপর দু-বছর এই দুই মধ্যচিত্ত কোচের জয়
যেন জোয়ার এনে দিয়েছিল মধ্যবিত্ত ভাবনায়। ইংরেজি মিডিয়াজুড়ে প্রশস্তি। মোরিনিও
চেলসিতে এসে সেরা দল তৈরি করেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ আনতে পারলেন না, বেনিতেজ যেমন আনতে পারেননি ইপিএল খেতাবও। কিন্তু তাঁদের প্রশিক্ষণ-ভাবনা,
যা প্রধানত রক্ষণ নিয়ে আরও, আরও এবং আরও বেশি
ভাবতে বাধ্য করায়, উঠে এসেছিল সাফল্যের প্রধান কারণ হিসাবে।
আর রক্ষণাত্মক ভাবনার সুবিধা, দলে মোটামুটি মানের ফুটবলারের
আধিক্য হলে ভাল হয়। সর্বোচ্চ স্তরের ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করার ঝামেলা অনেক। তাঁরা
উৎকর্ষ খুঁজবেন, মধ্যচিত্ততা খুঁজবে সাফল্য। মোরিনিও পেলেন
ফ্র্যাঙ্ক ল্যাম্পার্ডকে, বেনিতেজের হাতে স্টিভেন জেরার্ড।
দুজনেই আদ্যন্ত ‘কোচ-নির্ভর ফুটবলার’, মানে
কোচ যা বলবেন অক্ষরে অক্ষরে পালন করার মতো শৃঙ্খলাবদ্ধ পারফরমার। ইংরেজ
সংবাদমাধ্যম উদ্বাহু, স্বাভাবিক! তাঁদের দেখাদেখি ভারতের
ইংরেজি-শিক্ষিতরাও। প্রচলিত শুধু নয়, জনপ্রিয় হয়ে উঠল ‘আক্রমণ ম্যাচ জেতায়, রক্ষণ
জেতায় ট্রফি।’ গত একযুগ ধরে বার্সেলোনা তা হলে গোটা ২০ ট্রফি জিতল কি
পিকে-আলভেস-মাসচেরানোর জন্য - মেনে নিতে হবে?
যা হওয়ার ছিল, হলও। এই সুসংগঠিত প্রচারের ঝড় আস্তে
আস্তে গতি হারাতে শুরু করল। মোরিনিওর মালিক ইউরোপে সাফল্য না পেয়ে আর এত পয়সা খরচ
করেও নিজের দলকে বার্সেলোনার মতো খেলতে দেখতে না-পেয়ে তাড়ালেন তাঁকে। বেনিতেজ
আবারও উঠেছিলেন ইউরোপের ফাইনালে, কিন্তু এসি মিলান তাঁকে দ্বিতীয়বার
ভুল করে সুযোগ দেয়নি ‘মহৎ’ হয়ে ওঠার,
যে-সুযোগটা বার্সেলোনা দিয়েছিল মোরিনিওকে। তাতে অবশ্য সুবিধাই হল।
রেয়াল মাদ্রিদ ডেকে নিল জামাই আদরে মোরিনিওকে। তারপর প্রকাশ্যে এল তাঁর তারকা সামলানোর ব্যর্থতা এবং
দুর্দান্ত দল হাতে পেয়েও আক্রমণাত্মক হতে না-চাওয়ার চূড়ান্ত মধ্যবিত্ত ভাবনা। রেয়ালও
রাখল না দায়িত্বে। বেনিতেজকে এনেও একই ভাবে সরিয়ে দেওয়া হল, প্রত্যাশিত
মানের ফুটবল না-পেয়ে। স্পেন ‘সাফল্য’ খোঁজে
যেমন, একই সঙ্গে খোঁজে ‘মান’। কুৎসিত ফুটবল খেলে সাফল্য আনার যে-রাস্তায় হাঁটতেন মোরিনিও-বেনিতেজ,
রেয়াল মাদ্রিদ তাঁদের দুজনকেই বাতিল করে বুঝিয়ে দিয়েছে, ভাল ফুটবল
খেলে সাফল্য আনার রাস্তাতেই দলকে রেখে দিতে চায় ক্লাব কর্তৃপক্ষ।
মোরিনিওর খুব আশা ছিল, অ্যালেক্স
ফার্গুসন চলে যাওয়ার পর তাঁকে জামাই আদরে ডেকে নেবে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড।
কিন্তু ফার্গুসন তাঁকে মনোনীত করে যাননি। বাধ্য হয়ে
চেলসিতে আবার। আরও একটা প্রিমিযার লিগ এলেও খেলার ধরনে
কোনও পরিবর্তন আসেনি। যেমন আসেনি তারকাদের ঠিকঠাক ব্যবহার
করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতায়। আবার বিদায়। তারপর থেকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে যাওয়ার
ইচ্ছে প্রকাশ করতে কখনও দ্বিধা করেননি যেমন, ইংরেজ মিডিয়াও
রোজই লিখে গিয়েছে এবং যাচ্ছে যে, এই মোরিনিও ইউনাইটেডে এলেন
বলে। এই লেখার দিন পর্যন্ত যদিও তেমন কোনও নিশ্চয়তার কথা সরকারিভাবে শোনা যায়নি।
বেনিতেজকেও রেয়াল ছুড়ে ফেলার পর আসতে হয়েছে সেই অগতির গতি ইংল্যান্ডেই, নিউক্যাসল ইউনাইটেডে, যারা এখন অবনমন বাঁচাতে লড়ছে।
মোরিনিও-বেনিতেজদের বাজারদর যখন ক্রমশ নেমেছে, উঠে এসেছেন একঝাঁক সর্বোচ্চ মানের ফুটবলার, কোচের
আসনে, তাঁদের আক্রমণাত্মক দর্শন নিয়ে। এখানেও পথপ্রদর্শক ছিল
বার্সেলোনাই। ফ্র্যাঙ্ক রাইকার্ড ফুটবলার হিসাবে সর্বোচ্চ স্তরের। তাঁর হাত ধরেই
বার্সেলোনার উত্থান শুরু হয়েছিল। তারপর, এক মরসুমে যখন
ব্যর্থ, মোরিনিও তখনও চেষ্টা করেছিলেন বার্সেলোনার
ম্যানেজারি পাওয়ার। একেবারে এখনকার ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মতোই।
বার্সেলোনা-কর্তৃপক্ষ মানেনি। নিজেদের ‘দর্শন’ ধরে রাখতে বার্সেলোনা ‘বি’ দল
থেকে তুলে এনেছিল গারদিওলাকে। চার বছরে ১৪ ট্রফি দিয়ে গারদিওলা বিদায় নিয়েছিলেন
যখন, বার্সেলোনাকে অন্য গ্রহের দল আখ্যা দিয়ে দিয়েছিল ফুটবল
বিশ্ব। লিওনেল মেসি উঠে এসেছিলেন এই গ্রহের সন্দেহাতীত সেরা ফুটবলার হয়ে। এক বছর
বিশ্রাম নিয়ে বায়ার্ন মিউনিখে যান গারদিওলা। এবার তাঁর তৃতীয় বছর, জার্মান লিগ তৃতীয় বার জিততে চলেছে বায়ার্ন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের
সেমিফাইনালে উঠেছে। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলে সাত মরসুম থেকে সাতবারই চ্যাম্পিয়ন্স
লিগের সেমিফাইনালে তুলেছেন গারদিওলা, অভূতপূর্ব সাফল্য বললেও
কম! উঠেছেন জার্মান কাপের ফাইনালেও। ত্রিমুকুটের সন্ধানে ঠিক রাস্তায় এবং ঠিক
হাতেই আছে বায়ার্ন।
যদিও এই মরসুমের শেষেই বায়ার্ন ছাড়বেন গারদিওলা। যিনি
আসবেন, প্রাক্তন ফুটবলার এবং তিন-তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছেন কোচ হিসাবে – কার্লো আনসেলোত্তি। এসি মিলানের একটি রেকর্ড এখনও অটুট। শেষ ক্লাব হিসাবে
তারা পরপর দুবার ইউরোপ-সেরা হয়েছিল ১৯৮৯ ও ১৯৯০ সালে। সেই মিলানে
গুলিত-বাস্তেন-রাইকার্ড ডাচ ত্রয়ীর সঙ্গে ইতালীয় সতীর্থ বারেসি-মালদিনিদের পাশেই
খেলতেন আনসেলোত্তি। ফুটবলার হিসাবে তাঁর যোগ্যতা প্রশ্নাতীত। রেয়ালকে দশম
চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব এনে দেওয়ার পরও লা লিগা জেতাতে না-পারায় তাঁকে সরিয়ে দেওয়া
হয়েছিল। বড় ভুল নিঃসন্দেহে। এক মরসুম বিশ্রাম নিয়ে তিনি ফিরবেন বায়ার্নে, জার্মান চ্যাম্পিয়নরা নিশ্চিন্ত!
![]() |
জিদান, আনসেলোত্তি |
ফ্রান্সে ভাল কাজ করছেন প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন
লরাঁ ব্লাঁ। ১৯৯৮ বিশ্বজয়ী ফ্রান্স দলের সদস্য, ক্রুয়েফের
স্বপ্নের বার্সেলোনারও। প্যারিস সাঁ জাঁ-র দায়িত্ব নিয়েছিলেন ২০১৩ সালে। পরপর
চারবার ফরাসি লিগ জিতেছে দল। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে হারলেন আবার,
সঙ্গে সঙ্গেই ইংরেজ প্রচারমাধ্যম মোরিনিওর নাম তুলে আনল বাজারে!
কিন্তু, ব্লাঁ-কে সরানোর কোনও ভাবনা নেই আপাতত, বলেছে পিএসজি। আক্রমণাত্মক ফুটবলের আদর্শে অনুপ্রাণিত। দলে দক্ষিণ
আমেরিকার ফুটবলারদের প্রাধান্য, খেলাতেও রক্ষণকে অতিমাত্রায়
গুরুত্ব দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। থাকলে দাভিদ লুইজকে দলে রাখতেন না, নিশ্চিত!
লুইস এনরিকে তো বার্সেলোনায় এসে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে
গিয়েছেন যেন! মেসির সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন দক্ষিণ আমেরিকার আরও দুই দেশের দুই ফলা, ব্রাজিলের নেইমার ও উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজকে। বার্সেলোনা হয়ে উঠেছিল প্রায়
অপ্রতিরোধ্য। টানা ৩৯ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ড করে হারে শেষে জিদানের রেয়ালের
কাছে। ত্রিমুকুটের স্বপ্ন চুরমার হয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে
সিমিওনের আতলেতিকোর কাছে হেরে। লা লিগাতেও টানা তিনটি ম্যাচ হারার পর গেল-গেল রব
উঠেছিল। তবু, দেপোর্তিভোকে আট গোল দিয়ে এখনও শীর্ষে, যদিও পয়েন্টের বিচারে আতলেতিকোর সঙ্গে সমান ও রেয়াল থেকে মাত্রই এক
পয়েন্টে এগিয়ে। বার্সেলোনায় আসার পর ১১৭ ম্যাচে ৯১ জয়, মাত্র
১৩ হার – এনরিকের এমন রেকর্ড গারদিওলার প্রথম দু’বছরের চেয়েও ভাল। হ্যাঁ, এনরিকেও খেলেছিলেন
বার্সেলোনায়, গারদিওলা-ব্লাঁ-ফিগোর সঙ্গে। সেই দলেই ছিলেন
হুলেন লোপেতেগি, এখন যিনি এফসি পোর্তোর কোচ এবং বেশ ভাল কাজই
করছেন।
![]() |
দিয়েগো সিমিওনে |
একেবারে হালে রেয়ালের দায়িত্ব নিয়েছেন জিনেদিন
জিদানও। ফুটবলার হিসাবে ঠিক কোন স্তরের ছিলেন জিদান, আলাদা করে
আলোচনা অর্থহীন! এবং বেনিতেজকে সরিয়ে তাঁকে আনার পেছনে রেয়াল কর্তৃপক্ষের ভাবনাও
অনেকটা গারদিওলাকে আনার সময় বার্সেলোনার ভাবনার মতোই। এমন একজন যিনি ক্লাবটাকে
চেনেন, জানেন খুব ভাল করে, খেলাতে চান
সেই আক্রমণাত্মক ফুটবলের সহজাত ছন্দ ধরে রেখে। তা ছাড়া, আনসেলোত্তির সঙ্গে সহকারী
হিসাবে কাজ করে হাত পাকিয়েছিলেন জিদান। এই মুহূর্তে দুটি ট্রফির দৌড়ে আছে রেয়াল –
লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। ইউরোপে জিততে পারলে নিশ্চিতভাবেই অন্য উচ্চতায়
পৌঁছবেন জিদান এবং সে-সম্ভাবনা উড়িয়েও দেওয়া যাচ্ছে না। অন্তত ফাইনালে না-উঠলে তো
অঘটনই! রোনালদোরা ম্যাঞ্চেস্টার সিটিকে হারাতে পারবেন না, ভাবা কঠিন।
জিদানের আর এক সতীর্থ ক্লদ ম্যাকেলেলেও এসেছেন ক্লাব
কোচিংয়ে। যেমন, জিদানদের অধিনায়ক দিদিয়ের দেশঁ ২০১২ থেকে
আছেন ফ্রান্সের দায়িত্বে। ১৯৯৮-এ ফুটবলার হিসাবে নিজের দেশে বিশ্বকাপ জেতানোর পর
এবার নিজের দেশে ইউরো জেতানোর লক্ষ্য দেশঁর, কোচ হিসাবে! এসি
মিলানের দুই প্রাক্তন ক্লারেন্স সিডর্ফ ও ফিলিপো ইনজাঘিও বসছেন বেঞ্চে, বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে। রায়ান গিগসকে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড বেঞ্চে লুই ফন
হালের পাশেও দেখা যাচ্ছে নিয়মিত।
গারদিওলা-এনরিকে-সিমিওনে-জিদানদের ভিড়ে তাই ক্রমশ
অপ্রাসঙ্গিক মোরিনিও-বেনিতেজ। আর, সেরা ফুটবলারদের এভাবে কোচিংয়ে
নিয়মিত হয়ে ওঠাটাই হয়ত এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ফুটবলের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক!
No comments:
Post a Comment