Sunday, November 22, 2015

বেনিতেজের দর্পচূর্ণ, জিদান এবার রেয়ালের কোচ হলেন বলে!

২৪ পাসের সুয়ারেজ-গোল, সৌজন্য, @OptaJose
কাশীনাথ ভট্টাচার্য

বার্সেলোনা – ৪   রেয়াল মাদ্রিদ – ০
(সুয়ারেজ ১১, ৭৪, নেইমার ৩৯, ইনিয়েস্তা ৫৩)

খুয়ানদে রামোস ছিলেন রেয়াল মাদ্রিদের দায়িত্বে। বিপক্ষে পেপ গারদিওলার বার্সেলোনা। ২০০৯ লা লিগায় সেই ম্যাচেই শেষবার এল ক্লাসিকোয় যুযুধান দুই শিবিরের দায়িত্বে দুই স্পেনীয়। যদিও এই পরিচয়ে খুশি হওয়ার কোনও কারণই খুঁজে পাবেন না আজন্ম-কাতালান গারদিওলা। সেই ম্যাচে বার্সেলোনা এভাবেই গুঁড়িয়ে গিয়েছিল রেয়ালকে, ৬-২। আবার দুই শিবিরে দুই স্পেনীয় কোচ এবার। মাঝে ৬ বছর কিন্তু রেয়ালের হারের ব্যবধান একই, চার গোলের! কার্লো আনসেলোত্তির অভিশাপ?
দু’মরশুমে হোসে মোরিনিওর প্রভাব কাটিয়ে রেয়ালকে ফুটবলের পথে ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট ছিলেন ইতালীয় আনসেলোত্তি। গত বছর বের্নাবেউতেই কোচ লুইস এনরিকের অভিষেক হয়েছিল এল ক্লাসিকোয়, লুইস সুয়ারেজের তো বার্সেলোনা-অভিষেকই। দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছিল রেয়াল, তীব্র গতির প্রতি আক্রমণে। জিতেছিল ৩-১, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পেনাল্টি এবং পেপে ও বেনজেমার গোলে। রেয়ালকে বড় সাধের ‘লা দেসিমা’ বা দশম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেতাব এনে দেওয়ার পরও কর্তারা রাখেননি আনসেলোত্তিকে। ফল দেখুন। নিজেদের মাঠে রেয়াল এখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চার গোল খাচ্ছে শুধু নয়, সাত গোল খেলেও বলার থাকত না কিছুই। আর এখন তো আবার জিনেদিন জিদান কোচ হলেন বলে!
কেন? রাফা বেনিতেজের দলে ফিরে এসেছে মোরিনিও-সিনড্রোমগুলো, আবার! সের্খিও রামোস মারামারিতে মন দিয়েছেন, কার্ভাহাল তো চিরকাল এমনই করেন। ম্যাচের শুরুতেই রামোসের জঘন্য ফাউল, রেফারি দেখেও্ দেখেন না বেশিরভাগ সময়। জানেনই যে, রামোস এমন ফাউল আবারও করবেন, কার্ড দেখানোর সুযোগ এনে দেবেন যেচে, সেই ভেবেই হয়ত। না হলে, সুয়ারজকে ওই ফাউলের জন্য কার্ড না-দেখানোর আর কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়। রামোস তারপর ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে যা যা সম্ভব করেছিলেন। বিপক্ষ ফুটবলারের পায়ের ওপর পা দিয়ে দেওয়া, বক্সের মধ্যে সুয়ারেজকে পায়ে মেরে ফাউল (রেফারি দেখেও দেখেননি, নিশ্চিত পেনাল্টি), পরে একবার হলুদ কার্ড দেখলেন বটে, কিন্তু তার অনেক আগেই মাঠে থাকার অধিকার হারিয়ে ফেলেছিলেন রামোস। জাভি এরনান্দেজ টুইট করলেন ম্যাচ-শেষে, বক্তব্য, রেয়াল মাদ্রিদ হল ঠগীদের কারখানা! অধিনায়ক রামোসকে দেখলেই বোঝা সম্ভব। এমনকি রোনালদোও কনুই চালালেন জেনেবুঝে, রেফারি কড়া হলে আলভেসকে কনুই চালানোর জন্য লাল কার্ডও দেখাতেই পারতেন, আগে তাঁকে ফাউল করা হয়েছে এই সত্য মেনে নিয়েই। ইসকোর লাল কার্ডে সমস্যা হয়নি, রোনালদোকে বের করে দিলে সমস্যা আরও বাড়ত না কি রেয়ালের?
বার্সেলোনার জোড়া ফলার এই ম্যাচে তিন গোল!
ট্যাকটিক্স-ট্যাকটিক্স করে চিৎকার করেন যাঁরা, আসলে ট্যাকটিক্স হল রক্ষণে আরও জোর দেওয়া। যেমন মেরিনিও করেন, বেনিতেজও। দুজনের কখনই বনে না, সেই কারণে। দেখতেই পারেন না একে অপরকে। বেনিতেজের একটা বলার মতো সাফল্য আছে, ২০০৫ লিভারপুলের হয়ে সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনাল। ০-৩ পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে ৩-৩, পরে টাইব্রেকারে জয়। আনসেলোত্তি ছিলেন তখন মিলানে। ডিয়েটার হামানকে নামিয়ে কাকার ছুটি করে দিয়েছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে, তাতেই জয়, লিখেছিলেন ব্রায়ান গ্ল্যানভিল। হামান যদি এত বড়ই ফুটবলার হন যে কাকাকে ছুটি করে দিতে পারেন, তিনগোল না-খাওয়া পর্যন্ত তাঁকে নামানো যায় না কেন, গ্ল্যানভিলকে এ-প্রশ্নটা করার সুযোগ অবশ্য হয়নি! আর, ওই ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের শেষে কাকার ডিফেন্সচেরা থ্রু-টা আন্দ্রে শেভচেঙ্কো যে ওভাবে মিস করবেন, সেটাও কি বেনিতেজ জেনেই নামিয়েছিলেন হামানকে, জানা যায়নি।
তবু, জয় জয়ই। কিন্তু, তারপর বেনিতেজ লিভারপুলকে নিয়ে বা অন্য আরও বহু দল নিয়েও কী করেছেন গত ধস বছরে, জানা যায়নি! অন্তত, রেয়াল মাদ্রিদের কোচ হওয়ার মতো কিছু করেননি, গতবারের নাপোলির পারফরম্যান্সেই পরিষ্কার। করিম বেনজেমা পুরোপুরি সুস্থ নন। ফরাসি সতীর্থের সঙ্গে অনুচিত কাজ করে পস্তেছেন। কিন্তু, ক্লাসিকোয় খেলের মতো সুস্থ কি? ‘বিবিসি’ ধরে রাখতে আর চাপ বাড়াতে বেনিতেজ নামিয়ে দিলেন, মাঠে রাখলেনও বেনজেমাকে। হামেস রদরিগেজ আর মার্সেলো, খানিকটা খেলার চেষ্টা করছিলেন। দুটো শটও ছিল তিনকাঠিতে হামেসের যা দক্ষতার শীর্ষে থেকেই বাঁচাতে হয় ব্রাভোকে। মার্সেলোও একবার আলভেজকে পেরিয়ে শেষে শটটা সাইড নেটে মারেন, গোলে রাখতে পারলে হয়ত পরাস্ত করতেও পারতেন ব্রাভোকে। সেই দুজনকেই তুলে নিলেন। কী অসাধারণ ফুটবল-মস্তিষ্ক!
লুইস এনরিকে কিন্তু লিওনেল মেসিকেও সুস্থ পেয়ে অযথা তাড়াহুড়ো করেননি। মেসিকে ছাড়াই বার্সেলোনা যখন জিতে চলেছিল, নেইমার আর সুয়ারেজ ম্যাচ বের করে আনছিলেন গত দু’মাসে, হঠাৎ করে সেই ছন্দ ভাঙতে চাননি। হ্যাঁ, মাঝমাঠে ফিরিয়েছিলেন ইভান রাকিতিচকে। লুকা মোদরিচের ক্রোয়েশিয়া-সতীর্থর সঙ্গে মাঝমাঠ দখলের লড়াইতে সমানে-সমানে লড়তে পারবেন বলে। দুই ক্রোয়েশীয় পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়ছেন এল ক্লাসিকোয়, ক্রোয়েশিয়ার ফুটবলের বিরাট বিজ্ঞাপন, অবশ্যই। মেসি কিন্তু মাঠে এসেছিলেন তৃতীয় গোলের পর, রাকিতিচকে বিশ্রাম দিয়ে। অযথা হাঁকপাক না-করাটাও কোচেরই কাজ!
মাঝমাঠ যতটা সংঘবদ্ধ থাকলে বার্সেলোনর কোনাকুনি পাসগুলো আটকাতে পারে, রেয়ালের মাঝমাঠ তেমন ছিল না। সঙ্গে, সেন্ট্রাল ডিফেন্সে রামোসের অদক্ষতা। ভারানে-কে আগে এই ম্যাচে যতটা ভাল দেখিয়েছে, ততটাই খারাপ শনি-রাতে, হয়ত সঙ্গীর কারণেই। স্টপাররা খেলেন জুটিতে, ফুটবলের এই প্রাথমিক সত্য অনস্বীকার্য। মাসচেরানোর দুর্ভাগ্যজনক বেরিয়ে যাওয়ার পরও বার্সেলোনাকে ভুগতে হয়নি পিকে-র সঙ্গে পরিবর্ত মাথিউও জুটিতে যথেষ্ট ভাল খেললেন বলেই। আর হামেস-ক্রুস-মোদরিচের মাঝমাঠ রাকিতিচ-বুসকেতস-ইনিয়েস্তার সঙগে লড়াইয়ের আগেই হাল ছেড়ে দিয়েছিল যেন!
ম্যাচের সেরা হিসেবে নাম উঠছে দুজনের। আন্দ্রে ইনিয়েস্তা ও ক্লদিও ব্রাভো। নেইমার-সুয়ারেজও খুব বেশি পিছিয়ে থাকবেন না। বের্নাবাউতে প্রথমবার অধিনায়ক হিসেবে ইনিয়েস্তা অনবদ্য। এ-মরশুমের প্রথম গোল ও প্রথম অ্যাসিস্ট এল তাঁর পা থেকে। নেইমারকে সাজিয়ে দিয়েছিলেন দলের দ্বিতীয় গোলের সময়, তৃতীয় গোলের সময় নেইমার অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পায়ের পেছনের টোকায় রেখে দিয়ে যান, ইনিয়েস্তাকে শট করার জন্য। পরে নেইমার আবার মুনিরের জন্য যে-বলটা রেখেছিলেন, গোল না-করাটা অপরাধ! পিকে এতটাই রেগে গিয়েছিলেন যে রীতিমতো বকলেন জুনিয়র মুনিরকে। রেয়ালের মাঠে রেয়ালকে পাঁচগোল দেওয়ার সুবর্ণসুযোগ হাতছাড়া কে-ই বা করতে চায়!
প্রথম গোলের সময় ২৩ পাসের পর সের্খিও রোবের্তোর অনবদ্য ডিফেন্সচেরা বাঁপায়ের থ্রু আর চতুর্থ গোলের সময় মেসির বল ধরে এগিয়ে যাওয়ার পুরনো ছবির পাশাপাশিই রাখতে হবে ব্রাভোর অন্তত গোটা চারেক নিশ্চিত গোল-বাঁচানোও। রেয়াল বেশ খারাপ খেললেও গোল লক্ষ্য করে শট নিয়েছিল বেশ কয়েকবার, অতর্কিতে। হামেসের দুই, বেলের এক, বেনজেমার শট ও রোনালদোর প্লেসিং ও হেড - ব্রাভোকে তবু টলানো যায়নি।  বিশেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রেয়াল বেশ গতিতে শুরু করেছিল, বার্সেলোনাকে বল ধরতে না-দিয়েই। ওই সময় ২-০ এগিয়ে ছিল বার্সেলোনা। ব্রাভো একটি গোলও খেলে আরও জাঁকিয়ে বসতে পারত রেয়াল। বলা যায় না, হয়ত ফিরেও আসতে পারত ম্যাচে। চিলির অধিনায়ক তা হতে দেননি। ফলে, লা লিগায় ১২ রাউন্ড শেষে রেয়ালের থেকে এখন ৬ পয়েন্টে এগিয়ে গেল বার্সেলোনা (৩০)। সার্বিক ফলের হিসেবেও রেয়ালের আরও কাছে বার্সেলোনা, এখন ৯২-৯০।

আর, মেসিপ্রেমীদের জন্য সুখবর। তিন রাত পর, ইউরোপে, রোমার বিরুদ্ধে আবার সেই বাঁ পায়ের জাদু দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা, হয়ত শুরু থেকেই!

Saturday, November 14, 2015

আর্জেন্তিনা-ব্রাজিল নিয়ে পাঁচকথা!

লাভেজির গোল, লুইজ এসে পৌঁছতে পারেননি!

কাশীনাথ ভট্টাচার্য
লুকাস লিমার গোলে এক পয়েন্ট ব্রাজিলের
সুপার ক্লাসিকো অমীমাংসিত। ৩৪ মিনিটে এজেকিয়েল লাভেজির গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্তিনা। বিপক্ষ প্রতি আক্রমণে আসছে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে। ব্রাজিল রক্ষণে দাভিদ লুইজ আর দানি আলভেস এমন পরিস্থিতিতে গোল খাবেন, নিশ্চিত! বহুবার খেয়েছেন, আবারও খেলেন, যখন আলেখান্দ্রো দিমারিয়ার থ্রু খুঁজে পেল ইগাইনকে। আলভেস নিজের জায়গায় থাকেন কখনও কখনও। ওপরে উঠে নিচে তাড়াতাড়ি নামতে না-পেরে দৃষ্টিকটু ফাউলও করেন, আবার পায়ে বিপক্ষের কারও পা লাগলে ‘বাবা রে, মা রে’ বলে পা চেপে ধরে গড়াগড়িও যান। লুইজও নিজেকে ওপরে দেখতেই ভালবাসেন। সোজা নামছিলেন তিনি, কোনাকুনি আলভেজ। ইগাইনের বাড়ানো বল অবহেলায় খুঁজে নিল লাভেজিকে। পিএসজি-র স্ট্রাইকার ভুল করেননি। ৫৮ মিনিটে ১-১ ব্রাজিলের লুকাস লিমার। আলভেজের সেন্টারেই গোলের মুখ খোলে। মাঠে সদ্য-আসা দগলাস কোস্তা (কেন প্রথম থেকেই নয়?) সেই সেন্টারে জোরালো হেড করেছিলেন যা বারে লেগে ফিরে আসে বক্সের মধ্যে। সানতোসের লিমার শটে রোমেরো পরাস্ত। দু’মিনিটে দু’বার হলুদ কার্ড দেখে দাভিদ লুইজের বেরিয়ে-যাওয়া, ৮৬ মিনিটে। 
ম্যাচের বাকি পাঁচ কথা -

দিমারিয়ার ১০

চকচক করলেই সোনা হয় না যেমন, দশ নম্বর জার্সি পরলেই পেলে হওয়া যায় না, প্রবাদের মতোই সহজ সত্য। কোনও কোনও দশনম্বরী তো আবার পিঠে জার্সি ঝুলিয়েই নিজেকে পেলের চেয়েও বড় ভেবে ফেলতেন, অনায়াসে! এখানে তেমন হয়নি। কিন্তু, আর্জেন্তিনা-ব্রাজিল ম্যাচ টিভিতে দেখতে বসেই তাজ্জব। আলেখান্দ্রো দিমারিয়ার জার্সি নম্বর দশ কেন? এই আর্জেন্তিনা দলে দশ নম্বর জার্সির মালিক তো এখনও অবসর নেননি! অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের আর্ম-ব্যান্ড কাউকে না কাউকে পরতেই হয়, নিয়ম। আঘাতের কারণে অনুপস্থিতিতে জার্সি নম্বরের মালিকানাও কি পাল্টে যায়? বলিহারি আর্জেন্তিনা দলের পরিচালকদের বুদ্ধি! দিমারিয়া অবশ্য চেষ্টা করেছিলেন দশের মান রাখতে। ইগাইনকে পাসটা মনে রাখার মতোই। কিন্তু, মোরিনিওর রেয়াল মাদ্রিদে থাকার সময় রোনালদোকে প্র্যাকটিসে দেখে-দেখে ফুলের ঘায়ে মুচ্ছো যাওয়ার রোগটা এখনও রয়েছে। গত বছর চারেকে তেমন বিসদৃশ কিছু না-ঘটলেও, আর্জেন্তিনার ‘দশ’-এর এমন ইতিহাস অবশ্য মোটেই বেমানান নয়। বিশেষত যাঁদের মনে আছে ১৯৯০ বিশ্বকাপের কথা!

‘অপরাজিত’ দুঙ্গা!


এক পয়েন্ট এল। স্বস্তি দুঙ্গার। হারতে হল না যে! সামনে এবার পেরু। খেলাও ঘরের মাঠে। ৩ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট সঙ্গে। পেরুকে হারাতে পারলে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বেশ খানিকটা উঠে আসা যাবে। বুয়েনস আইরেসে আগের ২৮ ম্যাচে ১৪ হার ছিল ব্রাজিলের। এবার আর হারতে হয়নি। তা ছাড়া, আর্জেন্তিনার কাছে এবারও হারলেন না কোচ দুঙ্গা। আগের ৫ ম্যাচে ৪ জয় ও ১ ড্র ছিল। শেষ যেবার আর্জেন্তিনায় এই দুই চিরশত্রু দেশ খেলেছিল বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে, সেই ২০০৯, মেসির জন্মশহর রোজারিওতে দিয়েগো মারাদোনার প্রশিক্ষণে থাকা আর্জেন্তিনাকে ৩-১ হারিয়েছিল দুঙ্গার ব্রাজিল। এবার না জিতলেও টানা ৬ সুপারক্লাসিকোয় অপরাজিত, চাকরি নিয়ে টানাটানি পড়লেও পরিসংখ্যানে সন্তুষ্ট হবেন দুঙ্গা, নিশ্চিত! কিন্তু যা মানা কঠিন, থিয়াগো সিলভার না-থাকা। নেইমারকে অধিনায়ক করবেন বলে থিয়াগোকে বাদ দিয়েছেন দুঙ্গা। গোলে তথাকথিত বয়স্ক জেফারসনকে সরিয়ে তরুণতর আলিসনকে খেলানোর সিদ্ধান্ত যদিও সমর্থনযোগ্য, থিয়াগোকে বাদ দিয়ে ব্রাজিলের সেন্ট্রাল ডিফেন্স এখনও চূড়ান্ত নড়বড়েই।

অস্বস্তিতে তাতা মার্তিনো


৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট। তার মধ্যে ঘরের মাঠে দুটো ম্যাচ হয়ে গেল। যদিও দুটোই বেশ কঠিন ছিল, কিন্তু শুনবে কে? এবার আবার সামনে হামেস রদরিগেজ-এর কলম্বিয়া, তা-ও আবার কলম্বিয়াতে। মেসি-আগেরো-তেভেজ নেই সেখানেও। কোচ চাইবেন তিন পয়েন্ট। কিন্তু, এক পয়েন্ট এলেই যথেষ্ট, জানেন খুব ভাল করে। হারলে কিন্তু চাকরি বাঁচানো চাপ। এমনিতে দক্ষিণ আমেরিকায় ১৮ ম্যাচের বাছাইপর্ব। কলম্বিয়ার কাছে হেরে গেলেও ১৪ ম্যাচ থাকবে হাতে। কিন্তু তখন তাতা-র হাতে চাকরি থাকবে কিনা সন্দেহ‌!

জার্সিবদল


লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে আর্জেন্তিনার অধিনায়কত্ব করলেন হাবিয়ের মাসচেরানো, ব্রাজিলের নেতৃত্বে ফিরলেন নেইমার। দুই ক্যাপ্টেন আবার বার্সেলোনায় সতীর্থ। ম্যাচ শেষে মাসচেরানো এসে জড়িয়ে ধরলেন নেইমারকে। নেইমারই বললেন মনে হল, জার্সি বদলানোর কথা। দুই ক্যাপ্টেন বদলালেনও জার্সি। দিমারিয়া বা লাভেজির সে-সুযোগ ছিল না। তাঁদের পিএসজি সতীর্থ লুইজ লাল কার্ড দেখে আর মাঠে থাকতেন কী করে!

মেসি এবং আর্জেন্তিনা



ফিরেই দেখবেন, আর্জেন্তিনা হয়ত ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে দশ দেশের তালিকায় অষ্টম বা নবম স্থানে। দেশকে কাঁধে করে বিশ্বকাপের মূলপর্বে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে, হাসিমুখে। আর্জেন্তিনার মিডিয়ায় তখন সমস্বরে ‘বাঁচাও বাঁচাও’ আর্তনাদ। পরের ১৪ ম্যাচে নিজের মতো করে খেলে হাসি ফোটাবেন। রাশিয়ায় পৌঁছন নিশ্চিত করতে গেলে প্রথম চারে থাকতেই হবে। পাঁচে থাকলে আবার প্লে অফ খেলার ঝক্কি। শেষ পর্যন্ত মেসির পায়ে তা সম্ভব হলেই ভোল বদলাবে আর্জেন্তিনার মিডিয়া। ‘দেশের হয়ে খেলায় মন নেই’ ধ্বনি উঠবে, পোঁ ধরবে ইংরেজি-মিডিয়া সমর্থিত কিছু বাঙালি বাজারি সংবাদমাধ্যমও। তাঁকে ছাড়া বাছাইপর্বেই একটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ জিততে কেঁদেকঁকিয়ে একসা দল। কিন্তু বিশ্বকাপের ফাইনালে, কোপার ফাইনালে সেই দল কী করে পৌঁছয় নিয়ে একটি শব্দও লেখা হবে না তখন। উল্টে, আবার পুরনো দায়িত্ব নতুন করে জুড়ে দেওয়া হবে, বিশ্বকাপ জেতানোর। বাড়তি প্রাপ্তি হবে কটূক্তিগুলো, আজীবন টেনে যেতে হবে মেসিকে সে-বোঝাটাও!

Thursday, November 12, 2015

আপাতত ব্রাজিল এগিয়ে ৩৯-৩৮!


কাশীনাথ ভট্টাচার্য

রাত পোহালেই বুয়েনস আইরেসে, ২০১৮ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচে, আলবিসেলেস্তে বনাম সেলেকাও। অর্থাৎ আর্জেন্তিনা বনাম ব্রাজিল।
আর্জেন্তিনার সমস্যা - লিওনেল মেসি, সের্খেই আগেরো, কার্লোস তেভেজ নেই। ব্রাজিলের হয়ে ফিরবেন নেইমার, চার ম্যাচের মির্বাসন কাটিয়ে। অর্থাৎ, মেসি বনাম নেইমার হচ্ছে না।
আর্জেন্তিনার এবার বাছাইপর্বের শুরুটা ভাল হয়নি। প্রথম ম্যাচে হার, দ্বিতীয় ম্যাচে ড্র। ঘরে ১ পয়েন্ট মাত্র। ব্রাজিলও প্রথম ম্যাচে হেরেছিল, কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে হাতে ৩ পয়েন্ট নিয়ে খেলতে গিয়েছে আর্জেন্তিনার রাজধানীতে। 
বুয়েনস আইরেসে অবশ্য ব্রাজিলের রেকর্ড বেশ খারাপ। ২৮ ম্যাচে ৮ জয় মাত্র, হার ১৪।
চাপে আছেন দুই কোচই। তাতা মার্তিনোর আর্জেন্তিনা ধারাবাহিক নয। যদিও মেসির অনুপস্থিতিই দায়ী। বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনা ফাইনালে ওঠার পরও অনেকে বলেছিলেন, দল নাকি বেশ ভাল, মেসির নাকি কোনও অবদানই ছিল না। বাছাইপর্বের দুটি ম্যাচেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে মেসি না-থাকলে আর্জেন্তিনার কী দশা হয়!
ব্রাজিলে দুঙ্গাকে নিয়েও প্রচুর প্রশ্ন। সম্প্রতি জিকোও প্রশ্ন তুলেছেন, ব্রাজিলের দায়িত্ব কেন দুঙ্গাকে আবার দেওয়া হয়েছে? ব্রাজিলের কাগজেও উঠেছে প্রশ্ন, যদিও এই দল নিয়ে মাঝেমাঝেই জিতে যাওয়ায় কিছু সমর্থকও পেয়েছেন দুঙ্গা। কিন্তু, চিরশত্রুতার এই ম্যাচে, মেসিহীন আর্জেন্তিনাকে না-হারাতে পারলে আবারও প্রশ্নগুলো বড় আকারে উঠবে না, নিশ্চয়তা নেই!

সম্ভাব্য প্রথম ১১
আর্জেন্তিনা – রোমেরো, রোনকাখলিয়া, ওতামেন্দি, মোরি, রোখো, মাসচেরানো, বিখলিয়া, বানেগা, দিমারিয়া, লাভেজি, ইগাইন
ব্রাজিল – আলিসন, আলভেজ, মিরান্দা, দাভিদ লুইজ, ফিলিপে লুইস, গুস্তাভো, এলিয়াস, অস্কার, উইলিয়ান, কোস্তা, নেইমার  

পরিসংখ্যান
সমস্যা মানে বিরাট সমস্যা!
আর্জেন্তিনা-ব্রাজিল চিরশত্রুতার ইতিহাস এমন যে, আন্তর্জাতিক কোনও ওয়েবসাইটেও পরিসংখ্যান ঠিকঠাক নেই। আর্জেন্তিনীয় ওয়েবসাইটগুলোর দাবি, তারা এগিয়ে। স্বাভাবিকভাবেই উল্টোটা ব্রাজিলে। এমনকি, আন্তর্জাতিক ফুটবলের ক্ষেত্রে যদি আর এস এস এস এফ-কে (রেকর্ড স্পোর্ট সকার স্ট্যাটিসটিক্স ফাউন্ডেশন) নিরপেক্ষ এবং ঠিক ভেবে নেন, সেখানে দেখাচ্ছে, ২০০৮ সালের ১৮ জুনের পর ব্রাজিল আর আর্জেন্তিনা মুখোমুখি হয়নি!
তবু, এই পরিসংখ্যানে আর এস এস এস এফ-কেই ‘ঠিক’ ধরে এগোন হয়েছে। ২০০৮-এর পর আরও ৮বার ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা মুখোমুখি হয়েছে। সেই ৮ ম্যাচের পরিসংখ্যান মিলিয়ে এই মুহূর্তে ব্রাজিল এগিয়ে ৩৯-৩৮!
আরও সমস্যা এই যে, এই চিরশত্রুতার ইতিহাসে কে সবচেয়ে বেশি গোল করেছেন, খুঁজে পেলাম না! মানে, অনেকগুলি ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ১৯১৪ থেকে প্রায় সব ম্যাচের ফল। কিন্তু, গোল করেছিলেন কারা? হন্যে হয়েও পেলাম না।

প্রথম ম্যাচ
২০ সেপ্টেম্বর, ১৯১৪ – বুযেনস আইরেসে, আর্জেন্তিনা জয়ী ৩-০
শেষ ম্যাচ
১২ অক্টোবর, ২০১৪ – বেজিং, ব্রাজিল জয়ী ২-০


ম্যাচ
আর্জেন্তিনা
জয়ী
ব্রাজিল
জয়ী
ড্র
আর্জেন্তিনার
গোল
ব্রাজিলের
গোল
আর্জেন্তিনায়
৩৪
১৬
১১
৬০
৩৬
ব্রাজিলে
৩৯
২৩
৫৩
৮০
নিরপেক্ষ দেশে
২৮
১৩
৪৬
৪১
মোট
১০১
৩৮
৩৯
২৪
১৫৯
১৫৭
বিশ্বকাপ
বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব
১১
কনফেডারেশনস কাপ
কোপা আমেরিকা
৩২
১৫
৫২
৩৮
বুয়েনস আইরেস
২৮
১৪
৫২
৩৩
রিও দে জানেইরো
১৯
১২
২৫
৪৫




ঋণ - 
http://www.rsssf.com/tablesb/brasargres.html, https://en.wikipedia.org/wiki/Argentina%E2%80%93Brazil_football_rivalry, http://www.worldfootball.net/teams/brasilien-team/argentinien-team/11/, http://www.mundoalbiceleste.com/Article.aspx?id=2175  

Friday, November 6, 2015

ISL2: Preview - Atletico vs NE United

Having broken their three-match losing streak in spectacular fashion, Atletico de Kolkata will be keen to recover lost ground as they tackle NorthEast United FC in Hero Indian Super League clash in Kolkata on Saturday.

The defending champions were down for the count after losing three matches in a row. Nothing seemed to go right for Antonio Lopez Habas’ team until they landed in Mumbai and stunned high-flying Mumbai City FC 4-1.

The victory not just provided a new ray of hope for Atletico de Kolkata but also got them within sniffing distance of the table leaders. They are now placed fourth with 10 points and a win will bring them among the top three.

“We had to activate the team. Fortunately everything worked against Mumbai City. Different day, different match. It’s important that the players remain positive,” Habas had said after the victory over Mumbai City.

That night hero for Atletico de Kolkata was Iain Hume. The Canadian striker had gone without scoring a goal in six matches. He was doing all the hard work but there was no sign of any goal from the man who won the Golden Ball last year. Suddenly there was a flood of goals as Hume scored a hat-trick against Mumbai which pleased his coach.

“He is a good player who can play in any position. He can play from right winger to defender because he's fantastic,” said Habas.

NorthEast United FCon other hand needed a spectacular free kick from their marquee player Simao Sabrosa to give them a point against Delhi Dynamos in the previous match.

Delhi Dynamos seemed to have done just enough to script victory at home but the Portuguese and Barcelona winger rose from the bench to score within seconds of taking the field.

That performance would have given encouragement to coach Cesar Farias, who knows that three points from their next match against the defending champions will lift them out of the bottom and get them close to those teams who are entertaining hopes of a place in the semifinal.

“This draw against Delhi has given us the edge to skyrocket. And one of the most important things is that it is difficult to forget the wins or losses and move on to the next one. It is painful we lost two points especially when you played better than the other team. But in soccer, you have to put up,” said Farias.

NorthEast are at the bottom of the table with seven points from seven matches. Both their victories have come while playing at home.

ISL 2015 POINTS TABLE
NO
TEAMS
M
W
D
L
GD
PTS
1
FC Goa
8
4
2
2
1
14
2
Delhi Dynamos FC
8
4
2
2
0
14
3
FC Pune City
8
4
1
3
1
13
4
Mumbai City FC
8
3
2
3
1
11
5
Atletico de Kolkata
7
3
1
3
2
10
6
Chennaiyin FC
8
3
1
4
1
10
7
Kerala Blasters FC
8
2
2
4
0
8
8
NorthEast United
7
2
1
4
-6
7
* Updated after Match 31 DDFC vs MCFC
                                                                                                                     --- PRESS RELEASE